বিশ্বের সবচেয়ে বড় সাপের জীবাশ্ম কচ্ছ-এ আবিষ্কৃত
গু(caps)জরাটের কচ্ছ অঞ্চলের পানান্ধ্রো লিগনাইট খনি থেকে প্রাপ্ত একটি প্রাচীন
সাপের জীবাশ্ম বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, এটি পৃথিবীর ইতিহাসে
আবিষ্কৃত সবচেয়ে বড় সাপ হতে পারে।
ভারতের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি রুরকির গবেষকরা ২৭টি মেরুদণ্ডের হাড় উদ্ধার করেছেন, যা একটি পূর্ণবয়স্ক সাপের কঙ্কালের অংশ বলে মনে করা হচ্ছে।
এই সাপটির দৈর্ঘ্য আনুমানিক ১১ থেকে ১৫ মিটার (৩৬ থেকে ৪৯ ফুট) হতে পারে, যা প্রায় একটি স্কুল বাসের সমান। এর ওজন প্রায় এক মেট্রিক টন (২,২০০ পাউন্ড) হতে পারে।
গবেষকরা এই নতুন প্রজাতির নাম দিয়েছেন 'বাসুকি ইন্ডিকাস' (Vasuki Indicus), যা হিন্দু পুরাণে দেবতা শিবের গলায় আবদ্ধ বাসুকি নাগের নামানুসারে রাখা হয়েছে।
এই সাপটি মাদসোইড (Madtsoiidae) পরিবারভুক্ত, যা প্রায় ৯০ মিলিয়ন বছর আগে উদ্ভূত হয়েছিল এবং প্রায় ১২,০০০ বছর আগে বিলুপ্ত হয়েছে।
বাসুকি ইন্ডিকাস প্রায় ৪৭ মিলিয়ন বছর আগে মধ্য ইওসিন যুগে বাস করত, যখন পৃথিবীর জলবায়ু বর্তমানের তুলনায় অনেক উষ্ণ ছিল। এটি একটি ধীরগতির অ্যাম্বুশ শিকারি ছিল, যা তার শিকারকে পেঁচিয়ে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করত, ঠিক যেমন আধুনিক কালের অ্যানাকোন্ডা বা পাইথন করে।
এই সাপের আশেপাশে তখনকার পরিবেশে ক্যাটফিশ, কচ্ছপ, কুমির এবং প্রাচীন তিমি প্রজাতির প্রাণী বাস করত, যা সম্ভবত বাসুকির খাদ্য ছিল।
এই আবিষ্কারটি টাইটানোবোয়া (Titanoboa) নামক আরেকটি বিশালাকার প্রাচীন সাপের সঙ্গে তুলনীয়, যার জীবাশ্ম কলম্বিয়ায় পাওয়া গেছে এবং যা প্রায় ৬০ মিলিয়ন বছর আগে বাস করত। যদিও বাসুকির মেরুদণ্ডের হাড় টাইটানোবোয়ার তুলনায় কিছুটা ছোট, তবে এর দৈর্ঘ্য বেশি হতে পারে।
গবেষকরা মনে করেন, বাসুকি ইন্ডিকাস ভারতের একটি স্বতন্ত্র বংশধারার প্রতিনিধিত্ব করে, যা পরবর্তীতে দক্ষিণ ইউরোপ হয়ে আফ্রিকায় ছড়িয়ে পড়ে। এই আবিষ্কারটি প্রাচীন পৃথিবীর জীববৈচিত্র্য এবং বাস্তুতন্ত্র সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করে।
গুজরাটের এই আবিষ্কার আমাদের প্রাচীন পৃথিবী সম্পর্কে নতুন করে ভাবতে শেখায়। কোটি কোটি বছর আগে ভারতীয় ভূখণ্ডে যে এক দৈত্যাকার সাপ রাজত্ব করত, তা ভাবতেই গায়ে কাঁটা দেয়। এই জীবাশ্ম শুধু একটি বিজ্ঞান গবেষণার উৎস নয়, বরং এটি এক ঐতিহাসিক সম্পদ – যা আমাদের অতীতকে জানার দরজা খুলে দেয়।
ভবিষ্যতে এই ধরনের আরও গবেষণা ও খননের মাধ্যমে আমরা হয়তো আরও অজানা প্রাণীর সন্ধান পাব, যা আমাদের পৃথিবীর গহীন ইতিহাসকে আরও উন্মোচিত করবে।

Hi Today gk guide Viewer please, Do Not Spam In Comments